আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: সুস্থ রক্ত উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

শরীরের রক্ত উৎপাদন সঠিক রাখতে আয়রন অপরিহার্য একটি খনিজ। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য দৈনিক ৮ মিলিগ্রাম এবং নারীদের জন্য ১৮ মিলিগ্রাম আয়রনের প্রয়োজন। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ বেড়ে ২৭ মিলিগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। আয়রনের ঘাটতি হলে শরীরে দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে শিশু এবং গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে এই ঘাটতির কারণে অ্যানেমিয়া দেখা দিতে পারে।

আয়রন সরবরাহের দুটি প্রধান উৎস হলো প্রাণিজ এবং উদ্ভিজ্জ উৎস। এই দুটি উৎসের আয়রন গ্রহণ শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য অপরিহার্য। আসুন জেনে নিই কোন কোন খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন।

কলিজা

আয়রনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎসের মধ্যে কলিজা অন্যতম। গরুর কলিজায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন এবং প্রোটিন থাকে। যারা কলিজা পছন্দ করেন না, তারা ডিম এবং লাল মাংস খেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আধা কাপ ডিমের কুসুমে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে, এবং ৩ আউন্স লাল মাংসে থাকে ২-৩ মিলিগ্রাম আয়রন।

ডার্ক চকলেট

ডার্ক চকলেট শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি একটি ভাল আয়রনের উৎস এবং এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক।

ছোলা

এক কাপ ছোলায় ৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। পাশাপাশি, এটি উচ্চমানের প্রোটিনেরও একটি উৎকৃষ্ট উৎস। নিরামিষভোজীদের জন্য ছোলা একটি আদর্শ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়।

কুমড়ার বিচি

এক কাপ কুমড়ার বিচিতে ২ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়, যেমন রান্না করা, সালাদের সাথে মিশিয়ে, সিদ্ধ করে অথবা ভেঁজে।

ডালজাতীয় খাবার

ডাল আয়রনের একটি ভাল উৎস। এক কাপ ডালে প্রায় ৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবারও থাকে, যা কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

পালং শাক

এক কাপ রান্না করা পালং শাকে ৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এর সাথে প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-এ ও ই পাওয়া যায়। রান্না করা পালং শাকের পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে সহজেই শোষিত হয়।

সিদ্ধ আলু

সিদ্ধ আলু আয়রনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বি ভিটামিন এবং পটাশিয়াম সরবরাহ করে। একটুকরা খোসাসহ সিদ্ধ আলুতে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়।

অন্যান্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে কাজুবাদাম, কিশমিশ, টমাটো, মটরশুঁটি এবং শিমের বীচি উল্লেখযোগ্য। তবে, আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরপরই চা বা কফি পান করা উচিত নয়, কারণ এগুলো আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।